জঙ্গলের শিশুরা-০৪

ছোট্ট এ এতিম শিশুরা এত বেশী ভয় পেল যে তারা নিজেদের সাথে ফিসফিস করে কথা বলতেও সাহস করল না। জঙ্গলের গভীরতম স্থানে এসে তারা বুঝতে পারল তাদেরকে হত্যা করার জন্য এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা শুধু কান্ন করছে। আর তাদের পায়ের উপর পড়ে জীবন ভিক্ষা চাইছে।


তারা এত কাতর স্বরে কান্না করছিল আর জীবন ভিক্ষা করছিল , তাদের মধ্যে একজন , যার অন্তর অপরজন থেকে কিছুটা উদার, তার কিছু দয়া হল। এ বাচ্চাগুলো নিয়ে যে নিষ্ঠুর কাজটা করতে যাচ্ছিল তা ভেবে তার মনে কিছুটা দুঃখ অনুভুত হল। কিন্তু তার সাথী ছিল খুবই নিষ্ঠুর। সে তাদের জীবন বাঁচানোর প্রস্তাবে রাজী হল না। তাদের কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে ভয়াভহ রুপ ধারন করল। 'বোকামি করোনা, চল তাদের হত্যা করি। না হলে আমরা আমাদের প্রাপ্য পুরষ্কার কিন্তু পাবো না।

কিন্তু অন্য ডাকাত তার কথায় অবিচল রইল। সে কিছুতেই এই নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করবে না এবং হত্যা করতেও দেবে না। শেষ পর্যন্ত দু'জনের মধ্যে প্রচন্ড মারামারি শুরু হল।

বাচ্চা দুটি ডাকাতদের এই ভয়ানক মারামারি একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে দেখছিল আর কাঁপছিল।

বেশ কিছুক্ষণ লড়াই করার পর নিষ্ঠুরমত ডাকাতটা মারা পড়ল। লোকটা কাঁপতে কাঁপতে তাদের হাত ধরে দ্রুত এ স্থান ত্যাগ করল। যখন তারা জঙ্গলের নির্জনতম স্থানে পৌঁছাল লোকটি তাদের একটু বসার অনুমতি দিল। এখানে একটু বস, আমি তোমাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসি। আমি খুব বেশি সময় নেব না। খুব তাড়াতাড়ি আসব।

শীগ্রই সে গাছের ফাঁকে অদৃশ্য হয়ে গেল। সে দ্রুত সেখান থেকে সরে পড়ল । কারন সে জানে সে আর কোনদিন এখানে আসবে না।

প্রাসাদে ফিরে সে বাচ্চদের দুষ্ট চাচাটাকে বলল সে তাদের হত্যা করে এসেছে। এতে চাচা খুব খুশী হয়ে তার পাওনা পুরষ্কার তাকে বুঝিয়ে দিল। এখন তার ভাইয়ের সব সম্পদের মালিক সে একা । ডাকাত তার পুরষ্কার পেয়ে আবার তার নোংরা জীবন যাপনে ফিরে গেল।

No comments:

Post a Comment