ইতোমধ্যে বেচারা বাচ্চারা গাছের নিচে ডাকাতের ফেরার জন্য অধির আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে। বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেলে তারা নিশ্চিত হয়ে গেল ডাকাতটা আর ফিরবে না।
ছোট্ট বালকটা তার বোনকে বলল:
'হে বোন আমরা এখানে একদম একা। আমরা অবশ্যই এই গভীর বন থেকে বের হবার চেষ্টা করব।'
ছোট্ট মেয়েটা কাঁদতে শুরু করল। কারণ তার যথেষ্ট ক্ষিদে পেয়েছে। তাছাড়া সে খুবই ক্লান্ত। কিছুতেই সে পা বাড়াতে পারছে না। তার ভাই তাকে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ভাইটা নিজের কান্নাটা অনেক কষ্টে থামিয়ে বোনকে সাহস দিচ্ছে। দুজনে তারা এই গভীর জঙ্গল থেকে বের হওয়ার জন্য সামনের দিকে হাটছে।
কিন্তু প্রতি পদক্ষেপে তারা নিজের অজান্তে আরও গভীর জঙ্গলের দিকে যাচ্ছিল। এবং এক সময় সূর্য ডুবে গিয়ে রাত নেমে এল।
এক এক করে আকাশের তারাগুলো উদয় হল। ছোট্ট মেয়েটার কান্না থামছে না। সে বলল:
ভাইয়া আমি আর যেতে পারবো না। আমরা কি পুরো রাত এই গভীর জঙ্গলে কাটাবো?
আমারতো তাই মনে হয়। একটু সাহস দেখিয়ে ভাইটি হেসে বলল। কিন্তু এটা এত ভয়ানক না যতটা তোমার মনে হচ্ছে। দেখ! আকাশে কত সুন্দর তারা ঝিকিমিকি করছে।
তারা এখন জঙ্গলের গভীরতম স্থানে। খুবই ক্ষুদার্থ। ছিন্ন ভিন্ন হয়েছে পড়নের কাপড়। আর একটা পদক্ষেপও তাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
একটা কাঠের গুড়ির উপর নিজেদের দেহটাকে তারা এলিয়ে দিল।
ছোট ছোট হাত দুটো দিয়ে তারা পরস্পরকে ধরে রেখেছে। বিবর্ণগালদুটি একটি অপরটির সাথে অসহায়ভাবে লেগে আছে। দ্রুতই তারা ঘুমিয়ে পড়ল।
ছোটা দুটি কাঠবেড়ালি গাছের উপড় থেকে উকিঁ দিয়ে তাদের দেখছে। নাইটিঙ্গেল ঘুম পাড়ানির গান গাইল। তারা তাদের বাবা মাকে সপ্নে দেখল। রাত পার হয়ে গেলে ঘুমন্ত শিশুদের গায়ের উপর দিনের আলো আচঁড়ে পড়ল।
সকাল হয়ে গেছে। সোনালী আলো গাছের ফাঁক দিয়ে তাদের দিকে উঁকি মারছে। কিন্তু শিশুরা এখনও পরস্পর জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে। তাদের ঘুম কিছুতেই শেষ হয় না। সূর্য আস্তে আস্তে উপড়ের দিকে উঠে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হল কিন্তু তারা এখনও ঘুমিয়ে।
No comments:
Post a Comment