জঙ্গলের শিশুরা-০৬

সকাল হয়ে গেছে। সোনালী আলো গাছের ফাঁক দিয়ে তাদের দিকে উঁকি মারছে। কিন্তু শিশুরা এখনও পরস্পর জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে। তাদের ঘুম কিছুতেই শেষ হয় না। সূর্য আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হল কিন্তু তারা এখনও ঘুমিয়ে। তারা একটুও নড়াচড়া করছে না,তাদের চোখের পাতাও নড়ছে না। কারন তারা ঘুমের মধ্যেই মারা গেছে। তাদের সকল সমস্যার শেষ হয়েছে।


যখন রবিন পাখি আর কাঠবেড়ালী পাতার ফাঁক দিয়ে তাদের এই অবস্থা দেখতে পেল তারা তাদের জন্য খুবই বেদনা অনুভব করল। তারা জানে যে এ নিষ্পাপ শিশুদুটি মারা গিয়েছে। তারাতো তাদের জন্য কবরও খুড়তে পারবে না। নিজেদের ঠোটে করে তারা কিছু পাতা নিয়ে আসলো আর বাচ্চা দুটিকে তা দিয়ে ঢেকে দেয়ার চেষ্টা করল।

এভাবে তারা তাদের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাল। খুব শান্তভাবে তারা বাচ্চাদুটিকে পাতার আবৃত করল। সময়ের ব্যবধানে বসন্তের পাতার নিচে অসহায় দুই সহোদর চাপা পড়ল। রবিন তার শোকের গান গাইল। কাঠবেড়ালী আর খরগোশ এত দুঃখ পেল যে তারা তাদের খেলার কথা সেদিনের জন্য ভুলে গেল।

তাদের দুষ্ট চাচা তার অসদোপায়ে অর্জিত অর্থ খুব ভালো ভাবে উপভোগ করতে পারেনি। সেদিন থেকে কোন সৌভাগ্য তাকে আর ধরা দেয়নি। যে ডাকাতটি বাচ্চাগুলোকে জঙ্গলে রেখে এসেছিল সে অন্য একটা ঘটনায় মৃত্যু দন্ড পেল। তার সকল কর্মের কথা সে তখন প্রকাশ করে দিল। তাই জঙ্গলের শিশুদের এ দুঃখের কাহিনী মুখে মুখে হয়ে গেল। সবাই তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করল। দুষ্ট চাচাকে নিয়ে জনগনকে কিছুই করতে হল না। ধীরে ধীরে সে তার অন্যায়ভাবে অর্জিত সব সম্পদ হারালো এবং খুব অভাবের মধ্যে মারা গেল।



সমাপ্ত

1 comment: