The Lion, the witch and the Wardrobe-04

The Chronicles of NARNIA

C.S. Lewis
The Lion, the witch and the Wardrobe
.....................................
অধ্যায়-২
লুসি সেখানে কি পেল?



লুসি ও তুমনাস

'সুভ সন্ধ্যা' লুসি বলল। কিন্তু ফন পার্সেল তুলতে এত ব্যস্ত ছিল সে কোন উত্তর দিতে পারল না। শেষ হলে সে লুসিকে ছোট্ট একটা কুর্নিশ করল।
'গুড ইভনিং, গুড ইভনিং' বলল ফন।
মাফ করো। আমি খুব বেশী কৌতুহলী হতে চাই না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তুমি ইভের মেয়ে।
'আমার নাম লুসি'। ফনের কথা বুঝতে না পেরে লুসি বলল।
'হ্যা! তুমি তাই হবে। তারা তোমাকে বালিকা বলে।' ফন চিন্তা করে বলল।
'অবশ্যই আমি বালিকা।'লুসি অবাক হল।
'তুমি নিশ্চয়ই মানুষ?'
'অবশ্যই আমি মানুষ।' এমন প্রশ্নে লুসি অবাক হল।
'নিশ্চিত হওয়ার জন্য বললাম।' ফন নিশ্চিত হল।
'কি বোকা আমি। কিন্তু এর আগে আমি আর কখনও মানুষ দেখিনি। খুব খুশি হলাম। খুব খুশি হলাম।
এখন আমার পরিচয়টা বলি। আমি হলাম তুমনাস।' ফন বলল।
'মি. তুম্‌নাস। তোমাকে দেখে আমিও খুশি হলাম।' লুসি বলল।
'হে ইভের মেয়ে। আমি কি তোমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারি কিভাবে তুমি এই নার্নিয়াতে এলে?'
'নার্নিয়া? এটা আবার কি?' লুসি জানতে চাইল।
'এটা হল নার্নিয়া। আমরা এখন যেখানে দাড়িয়ে আছি এখান থেকে পূব সাগরের কেয়ার প্যারাবলের বিখ্যাত ক্যাসল পর্যন্ত পুরোটাই নার্নিয়ার এলাকা। তুমি নিশ্চয়ই পশ্চিমের দুষ্ট জঙ্গল থেকে এসেছ?'
'আমি খালি একটা রুমের এক ওয়ারড্রবের ভিতর থেকে এখানে চলে এসেছি।' লুসি বলল।
'ওহ!' কিছুটা শান্ত কন্ঠে তুমনাস বলল।
'ছোট্ট থাকতে ভুগোলটা খুব ভাল করে পড়িনাই। তাই আমি দূরের অনেক দেশ সম্পর্কে খুব ভালো জানিনা। কিন্তু এখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।' তুমনাসের কন্ঠে আক্ষেপ।
'কিন্তু আমি দূরের কোন দেশ থেকে আসিনি। কয়েক পা পেছনে একটা রুমের ভেতর থেকে এসেছি।' পেছনের দিখে দেখিয়ে লুসি হাসতে হাসতে বলল। 'কিন্তু সেখানে এখন গ্রীষ্ম কাল। কিছুই বুঝতে পারছি না।'
'নার্নিয়াতে প্রায় শীত কাল থাকে। এখানে এভাবে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথা বললে আমাদের ঠান্ডা ধরে যাবে।' তুমনাস বলল।
'হে দূরের গ্রীষ্মপ্রধান দেশের ওয়ারড্রব থেকে আগত ইভের কন্যা। আমি কি তোমাকে আমার বাড়ীতে একটু চা পান করার আমন্ত্রণ জানাতে পারি।' তুমনাস বলল।
'ধন্যবাদ মি. তুমনাস। আমি ভাবছি আমার এখন যাওয়া প্রয়োজন।' লুসি বলল।
'এইতো সামনেই আমার বাড়ী।'ফন বলল।

The Lion, the witch and the wardrobe-3

The Lion, the Witch and the Wardrobe
The Chronicles of NARNIA
C.S. Lewis
.........................

অধ্যায়-০১
লুসি একটি ওয়্যারড্রবের ভেতরে উকি দেয়

----------------------

একটু পরেই লুসি নিজেকে এক বনের মধ্যে আবিষ্কার করল। সেখানে রাত। তার চারপাশের আকাশে ঝড়ছে তুষারের পালক।
লুসি একটু ভয় পেল। কিন্তু তার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। লুসি মাথা ঘুরিয়ে পেছনে ফিরে দেখল, ঘন গাছের সারির ফাকে এখনও ওয়ারড্রবের খোলা দরজাটা সে দেখতে পাচ্ছে।ঘরের ভেতরটাও সে দেখতে পাচ্ছে। ওখানে এখনও দিনের আলো অথচ এখানে রাত।
'কোন সমস্যা হলে সে এখনও সেখানে ফিরতে পারবে।' লুসি মনে মনে ভাবল।
সে সামনের দিকে হাটছে। বনের মধ্যে বরফের উপড় পায়ের শব্দ সে শুনতে পাচ্ছে। সে একটা লাইট পোস্টের দিকে যাচ্ছে। মিনিট দশেক হাটার পর সে লাইট পোস্টের নিকট চলে এল। লুসি বুঝতে পারছে না গভীর জঙ্গলের মধ্যে এই লাইট পোস্টটা কেন? কেউ মনে হয় এদিকে আসছে। লুসি পায়ের শব্দ শুনতে পাচ্ছে। একটু পরেই অদ্ভুদ এক লোক গাছের ফাক থেকে বেরিয়ে এল।
লোকটা লুসির চেয়ে একটু লম্বা হবে।তার মাথায় একটা ছাতা ধরা আছে।ছাতার উপরটাতে বরফ পড়ে সাদা হয়ে আছে। কোমড় থেকে উপরের অংশটা তার মানুষের আকৃতি। কিন্তু তার পাগুলো ছাগলের মত। সেগুলোর উপর লোম, চকচকে কাল রংয়ের।পায়ের পরিবর্তে আছে ছাগলের খুর। তার একটা লেজও আছে। লুসি এটা প্রথমে খেয়াল করেনি। তার কাধে একটা লাল উলের মাফলার। চামড়াটা একটু লালচে ধরনের। অদ্ভুদ এবং শান্ত তার চেহারাটা। তাতে একটু হালকা দাড়ি আর কোকড়ানো চুল আছে। চুলের ফাকে কপালের দুপাশে গজিয়েছে দুটো শিং। তার এক হাতে ছাতাটা ধরা আর অন্য হাতে বাদামি কাগজে মোড়ানো কিছু পার্সেল। মনে হল বড়দিনের গিফট কিনে ফিরছে সে। এটা একটা ফাউন। হঠাত লুসিকে দেখে কাপতে কাপতে তার পার্সেলটা হাত থেকে পরে গেল।
'সুপ্রভাত।' কাপতে কাপতে ফাউন বলল।

The Lion, The witch and the wardrobe-02

The Lion, the Witch and the Wardrobe
The Chronicles of NARNIA
C.S. Lewis
.........................

অধ্যায়-০১
লুসি একটি ওয়্যারড্রবের ভেতরে উকি দেয়


একদা পিটার, সুসান, এডমন্ড এবং লুসি নামে চার ছেলেমেয়ে ছিল। এই গল্পটা তাদের মধ্যে কিছু একটা ঘটার গল্প। তখন তাদের লন্ডন থেকে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছিল। কারন যুদ্ধ বিমানগুলো আকাশ থেকে বোমা ফেলছিল। তাদের এক বৃদ্ধ প্রফেসরের বাসায় পাঠানো হচ্ছিল যে কিনা বাস করত দেশটির প্রাণকেন্দ্রে। নিকটবর্তী রেল স্টেশনটি দশ মাইলের মধ্যে আর সবচেয়ে কাছের পোষ্ট অফিসটি ছিল দুই মাইল দূরে। তার স্ত্রী ছিল না। বড় একটি ঘরে তিনি তিন চাকর এবং এক গৃহপরিচারিকা সহ বাস করতেন। চাকরগুলোর নাম যথাক্রমে আইবি, মার্গারেট ও বেটি (যদিও তাদের নাম গল্পে খুব কম আসবে)। তিনি নিজেই ছিলেন এক বৃদ্ধ আর তার সাদা কোকড়ানো চুলগুলো বড় হয়ে তার মুখ পর্যন্ত ঢেকে দিয়েছিল। তারা সবাই তাকে মুহুর্তেই পছন্দ করে ফেলল। কিন্তু প্রথম সন্ধ্যায় যখন তিনি তাদের সাথে দেখা করতে এসে তাকে এতই বিশ্রী দেখাচ্ছিল যে লুসি ( যে ছিল সবার ছোট) একটু ভয়ই পেয়ে গেল। এডমন্ডের (লুসির বড় জন) খুব হাসি পাচ্ছিল এবং সে তার হাসি কোন রকমে চেপে রাখল।
প্রফেসরকে বিদায় জানিয়ে তার উপরের তলায় তাদের প্রথম রাত কাটাতে গেল। ছেলেরা মেয়েদের রুমে এসেই কথা শুরু করল।
'আমরা মনে হয় একটা ঝামেলায় পড়লাম। এতে কোন সন্দেহ নাই' পিটার বলল।
'ব্যাপারটা খুব চমতকার মনে হচ্ছে। এই বুড়ো লোকটা আমাদের যা খুশী তাই করতে দেবে।'
আমার মনে হয় সে এক বুড়ো হরিণ। সুসান বলল।
ওহ! থামতো। এডমন্ড বলল। নিজে সে ক্লান্ত না হওয়ার ভান করছে। আর এই অবস্থাটা তাকে বদমেজাজি করে রাখে। এভাবে কথা বলো না।
কিভাবে? সুসান বলল। হ্যা এখন সবাই ঘুমানোর সময় হয়েছে।
মায়ের মত কথা বলার চেষ্টা করছ? এডমন্ড বলল।
তুমি কে আমায় বিছনায় যেতে বলছ? তোমার বিছানায় তুমি যাও।
আমরা সবারই কি বিছানায় যাওয়া উচিত নয়? লুসি বলল।
কথা বলতে শুনলে বুড়োটা নিশ্চয়ই আমাদের বকা দিবে।
'নিশ্চয়ই না'। পিটার বলল।
আমি তোমাদের বলেছি এটা হল এমন একটি বাড়ি তোমরা যাই করনা কেন কেউ কখনও কিছু বলবে না। কারন ডাইনিং রুমটা এখান থেকে কমপক্ষে দশ মিনিট হাটা পথ দূরে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটা সিড়ি পথ এবং করিডোর রয়েছে।
'গোলমাল কিসের?' লুসি হঠাত বলল।
এত বড় বাড়ি সে আর কখনও দেখেনি। অনেক লম্বা লম্বা করিডোরগুলো শুন্য রুমেগুলোতে গিয়ে মিশেছে। গা ছমছম করছে তার।


'পাখির আওয়াজ, বোকা'। এডমন্ত বলল।
পেচা। বলল পিটার। পাখিদের জন্য চমতকার একটা স্থান এটা। আমি ঘুমাতে গেলাম। কাল দেখা যাবে। এধরনের জায়গায় তুমি যে কোন কিছু পেতে পার। আমরা আসার সময় পর্বতগুলো মনে আছে? গাছের সারি? ঈগলও থাকতে পারে।স্ট্যাগও থাকতে পারে। বাজপাখিও থাকতে পারে সেখানে।
শিয়াল! বলল এডমন্ত।
খরগোশ! বলল সুসান।
কিন্ডু পরদিন সকালে তারা যখন ঘর থেকে বেরুল মুষুলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এত ভারি বৃষ্টি তারা কোন পাহাড় বা ঘন গাছের বাগান কিছুই দেখল না। এমনকি বাগানের মধ্যের নদীও।
'প্রচুর বৃষ্টি হবে।' বলল এডমন্ড।
প্রফেসরের সাথে তারা এই মাত্র নাস্তা শেষ করল। উপরের তলার ছোট একটা রুমে তিনি তাদের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। ছোট রুমটির একপাশে দুটি জানালা এবং অপর পাশে একটি জানালা।
তোমার প্যাচাল থামাও, এড। সুসান বলল।
আমি নিশ্চিত ঘন্টাখানেকের মধ্যে আকাশ পরিষ্কার হবে। আর ইতোমধ্যে আমরাও অবস্থ হয়ে উঠব ।এখানে প্রচুর বই আছে।
আমার জন্য নয়। বলল পিটার। আমি ঘরটাতে একটু অভিযান চালাবো।
প্রত্যেকের কাছে বিষয়টা ভালো লাগল।
আর এভাবে অভিযানটা শুরু হল। এটা এমন একটা ঘর যার কোন শেষ নেই। আর অনেকগুলো অপ্রত্যশিত স্থান।
প্রথম কয়েকটি দরজা খুলে তারা শুধু বেডরুম পেল।
এরপর তারা বড় একটি রুম পেল যা ছবিতে পূর্ণ। পরের রুমগুলোতে শুধু বই আর বই। বেশির ভাগই পুরানো। কিছু কিছু বাইবেল থেকেও বড়। একটু পরেই তারা সম্পূর্ণ খালি একটা রুম পেল। এত বড় রুমটাতে একটি মাত্র ওয়ারড্রব ছাড়া আর কিছুই নেই।
'কিছুই নেই এখানে।' পিটার বলল। লুসি ছাড়া সবাই রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল। সে রইল, কারণ সে ভাবছিল ওয়ারড্রবটার মধ্যে মূল্যবান কিছু থাকতে পারে। যদিও সে ভাবল এটা তালা বন্ধ থাকতে পারে।
সে অবাক হল। ওয়ারড্রবের দরজাটা তালা বন্ধ নেই।
সে যখন দরজা খুললে দুটো প্রজাপতির ডিম শব্দ করে নিচে পড়ল।
ভিতরে সে কিছু কোট ঝুলানো দেখতে পেল। বেশির ভাগই উলের। না উল্লেখ করার মত কিছুই এখানে নেই। নিজের অজান্তেই সে একটু সামনের দিকে আগাল। যা ভেবেছিল তা হয় নাই। সে মনে করেছিল একটু পরেই তার মাথাটা ওয়ারড্রবের শেষভাগে এসে লাগবে। আরও একটু সে ঢুকল। কোটের আরেকটা সারি। ভিতরে প্রায় অন্ধকার। সে হাতড়াতে লাগল যাতে সামনে তার মাথাটা লেগে না যায়। সে আর এক পা এগুলো, দু পা , তিন পা। বার বার মনে হচ্ছিল এখনি তার আঙ্গুলের মাথাটা ওয়ারড্রবের শেষ প্রান্তে লাগবে। কিন্তু তা হল না।
'এটা হয়ত বড় একটা ওয়ারড্রব' লুসি্ কোটের ফাকে ফাকে আরও একটু আগাতে আগাতে ভাবল।মনে হচ্ছে তার পায়ের নিচে কিছু একটা ভেঙে যাচ্ছে। প্রজাপতির ডিম হবে হয়ত।হাতটা নিচের দিকে নামিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করল। শক্ত কিছু অনুভব করার পরিবর্তে সে নরম কোমল কিছুর অনুভুতি পেল। পাউডারের মত। খুবই ঠান্ডা। সে অবাক হল। আর একটু সামনে আগাল।
পরবর্তি মুহুর্তে সে যা অনুভব করল তা মোটেই কোমল কোন কিছু নয়। কিছুটা শক্ত এবং কা্টা কাটা। এটা গাছের শাখা! লুসি অবাক হল। তার সামনে আলো। তার পেছনে ওয়ারড্রবটা এখনও দেখা যাচ্ছে। তার গায়ে ঠান্ডা কি যেন পড়ছে।

The Lion, The witch and the wardrobe-01

The Lion, The witch
And the wardrobe
-C.S. Lewis
..............................
লুসি বারফিল্ডের প্রতি

আমার প্রিয় লুসি,
এই গল্পটা আমি তোমার জন্য লিখেছিলাম। কিন্তু আমি যখন এই গল্পটা শুরু করি তখন বুঝতে পারিনি বালিকারা গল্পের চেয়ে দ্রুত বড় হয়। ফলে তুমি ইতোমধ্যেই পরীর গল্প শোনার চেয়ে বড় হয়ে গিয়েছ।ব্ইটি যখন প্রিন্ট হবে তখন তুমি আরও বড় হয়ে যাবে। কোন একদিন তুমি আবার সেই বয়সে পৌছবে যখন তোমার আবার পরীর গল্প পড়তে ভালো লাগবে। তখন তুমি আবার তাকের উপরের ধুলো পরিষ্কার করে বইটি নামিয়ে পড়বে। তখন আমাকে বলিও বইটা কেমন লেগেছে। সম্ভবত ততদিনে আমি এত বধির হব শুনতে পাবো না, এত বৃদ্ধ হব তোমার কথা বুঝতে পারবো না। তারপরও আমি তোমার প্রিয়
দাদুমনি রয়ে যাবো।

C.S. Lewis

অলস জ্যাক

From Joseph Jacob's English Fairy Tales
Lazy Jack
........................................

অলস জ্যাক

অলস রাহা
একদা জ্যাক নামক এক বালক ছিল।অন্য বালকদের মত সে তার মায়ের সাথে বাস করত। তারা ছিল খুবই দরিদ্র। বৃদ্ধ মহিলা সুতা বুনে জীবিকা অর্জন করত। কিন্তু জ্যাক ছিল এত অলস সে কিছুই করত না।শুধু রোদে দৌড়াদৌড়ি করত। আর শীতকালে আগুনের পাশে বসে কাটাত।তাই তাকে সবাই অলস জ্যাক বলেই ডাকত।
তার মায়ের কোন কাজেই সে সাহায্য করত না। তাই এক সোমবার তার মা তাকে বলল: তুমি যদি কোন আয় না কর তাহলে তোমাকে আমি ঘর থেকে বের করে দেব।
এতে জ্যাকের চেতনা হল। সে পাশের ফার্মে কাজ খুজতে গেল। সারাদিন কাজের পর তাকে একটা পেনি দেয়া হল। সে পেনিটা নিয়ে নদীর ধারে খেলতে খেলতে এটা কোথায় হারিয়ে গেল।
‘বোকা ছেলে।‘ তার মা বলল। এটা তোমার পকেটে রাখা উচিত ছিল।
এরপর থেকে আমি তাই করব। বলল জ্যাক।
মঙ্গলবারে জ্যাক আবার কাজ খুজতে গেল। এবার রাখালের কাজ। সারাদিন কাজের পর তার মালিক তাকে এক কলস দুধ দিল। জ্যাক এবার কলসের দুধ তার পকেটে ঢেলে দিল। বাড়ী আসতে আসতে তার সব দুধ পড়ে গেল।
‘বোকা ছেলে, তুমি এটা তোমার মাথায় করে নিয়ে আসা উচিত ছিল।‘ তার মা বলল।
এরপর থেকে আমি তাই করব। বলল জ্যাক।
পরদিন বুধবার জ্যাক আবার কাজ খুজতে গেল। এবার সে পেল এক ফার্মের কাজ। সারাদিন কাজের পর তার কাজের বিনিময়ে সে এবার পেল ক্রিম দধি। জ্যাক ক্রিম দধি মাথায় নিয়ে ঘরের দিকে যাত্রা শুরু করল। বাড়িতে পৌছার আগের কিছু ক্রিম দধি গড়িয়ে পড়ল আর কিছু মাথায় মিশে গেল।
‘বোকারাম ছেলে, তুমি সতর্কতার সাথে এগুলো হাতে করে আনলে না কেন?’ মা রেগে বলল।
আচ্ছা মা আমি এরপর তাই করব। জ্যাক উত্তর দিল।
শুক্রবার অলস জ্যাক আবার কাজের সন্ধানে বের হল। এবার তাকে কাজে নিল এক বেকার।বেকার তাকে তার সারাদিনের কাজের বিনিময়ে একটা বিড়াল দিল। জ্যাক এবার খুব সাবধানতার সাথে বিড়ালটাকে হাতে করে নিয়ে আসছিল। কিন্তু বিড়ালটা তাকে আচড়াতে শুরু করল। ফলে সে এটাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হল।
‘বোকা ছেলে, তোমার উচিত ছিল এটাকে একটা রশি দিয়ে শক্তকরে বেধে টেনে টেনে নিয়ে আসা।‘ মা রেগে বলল।
ঠিক আছে মা। এরপর আমি তাই করব। জ্যাক উত্তর দিল।
পরদিন শনিবার। জ্যাক এবার কাজ পেল এক কশাইয়ের দোকানে। যে তাকে সারাদিনের কাজের বিনিময়ে ভাল একটা উপহার দিল। এটা ছিল একটা খাশির মাংশের টুকরা।জ্যাক এটাকে শক্ত করে বেধে টেনে হিচড়ে নিয়ে আসল। পথে এত নোংড়া ময়লা ছিল যে বাড়িতে আনতে আনতে এটা একেবারে নষ্ট হয়ে গেল।
এবার তার মা আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারল না। কারণ পরদিনই হচ্ছে রবিবার। ডিনারের জন্য তার মায়ের কিছু বাধাকপি রেডি করার কথা।
‘আরে বোকার হদ্দ, তোমার উচিত ছিল এটা কাধে করে নিয়ে আসা।‘ বিরক্ত হয়ে মা বলল।
এরপর আমি তাই করব। জ্যাক উত্তর দিল।
পরবর্তি সোমবার , অলস জ্যাক আবার বের হল। এবার সে কাজ পেল গরু চড়ানোর। তাকে কাজের বিনিময়ে একটা গাধা দেয়া হল।
জ্যাক দেখল, এই গাধাটাকে কাধে নেয়া খুবই কষ্টকর।অনেক কষ্টের পর সে এটাকে কাধে নিতে সক্ষম হল। এবং ধীরে ধীরে তার বাড়ীর দিকে হাটা শুরু করল। গাধাটাকে কাধে নিয়ে জ্যাক হাটছে তো হাটছেই।
তার পথে ছিল এক ধনী ব্যক্তি যার একটি সুন্দর মেয়ে ছিল। মেয়েটা ছিল বোবা আর বধির। সে তার জীবনে কোনদিনই হাসেনি। ডাক্তার বলল সে কখনও কথা বলতে পারবে না যদি না কেউ তাকে হাসায়। এই মেয়েটা জানালা দিকে জ্যাকের গাধা কাধে নিয়ে হাটাছে। গাধার পাগুলো উপরের দিকে। এটা দেখে সে হাসতে হাসতে তার শুনা এবং কথা বলার শক্তি ফিরে পেল। তার পিতা খুশিতে আটকানা হয়ে গেল।তাদের পরিবারের সবাই আনন্দে আত্মহারা। তারা খুশি হয়ে অলস জ্যাকের সাথে তাদের মেযের বিযে দিতে প্রতিজ্ঞা করল।
এরপর থেকে অলস জ্যাক খুব ধনী হয়ে গেল। তারা একটি বড় ঘরে বসবাস শুরু করল। জ্যাকের মায়ের আর আনন্দের সীমা রইল না। বাকী জীবনটা তাদের সুখেই কাটল।

রাজার দুধের পুকুর


রাহা
The pond of Milk
From 100 morale stories for kids
.....................................................

রাজার দুধের পুকুর
একদা এক রাজা তার লোকদের একটি দিঘি খনন করতে বলল। দিঘীটা খনন করা হলে রাজা ঘোষনা করে দিল রাজ্যের প্রতিটি ঘর থেকে এক গ্লাস করে দুধ নিয়ে আসতে হবে। আর রাতে তা দিঘীতে দিতে হবে। সকালে রাজা দেখতে চায় তার দিঘী দুধ দিয়ে পূর্ণ হয়েছে। রাজার এ আদেশ শুনে প্রত্যেকে নিজ নিজ ঘরে ফিরে এল।
এক লোক রাতে রাজার পুকুরে দুধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন সময় তার মাথায় এক চিন্তা এল। সে ভাবল। যেহেতু সবাই রাজার পুকুরে এক গ্লাস করে দুধ দিবে। আমি যদি দুধের পরিবর্তে এক গ্লাস পানি দিই তাহলে কেউ এটা ধরতে পারবে না। কারণ সবাই গভীর রাতে দুধ দেবে। রাতের অন্ধকারে আমি কি দিচ্ছি তা কেউ বুঝতে পারবে না । সবাই মনে করবে আমি দুধই দিচ্ছি। এই চিন্তা করে লোকটি মনে মনে ভাবল আমি দুধের পরিবর্তে পানিই দেব।
রাতে সে তাড়াতাড়ি গিয়ে এক গ্লাস পানি রাজার পুকুরে দিয়ে আসলো।
পরদিন রাজা তার দুধের পুকুর দেখতে এল। একি পুকুর পানিতে ভর্তি।দুধের কোন চিহ্ন এখানে দেখা যাচ্ছে না।রাজার পুকুর পানিতে পূর্ণ।
আসলে প্রতিটি লোকই ভেবেছিল অন্য একজনে দুধ দেবে তাই আমি পানি দিই। এভাবেই রাজার পুকুর পানিতে পূর্ণ হয়ে গেল।

The Angel



দি এন্জেল
একদা একটা শিশু ভুমিষ্ট হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। একদিন শিশুটি সৃষ্টিকর্তাকে বলল: তারা বলছিল তুমি আমাকে পৃথিবীতে পাঠাবে। আমি এত ছোট আর অসহায়। আমি ওখানে কিভাবে থাকব?
সৃষ্টিকর্তা বলল, আমার অনেকগুলো এন্জেলের মধ্য থেকে আমি তোমার জন্য একজনকে ঠিক করে রেখেছি। সে তোমার জন্য অপেক্ষা করবে এবং সেই তোমার দেখাশুনা করবে।
কিন্তু এখানে আমি গান শুনা আর হাসি ছাড়া আর কিছুই দেখিনা। আর আমার খুশীর জন্য এসবই দরকার। বাচ্চাটা বলল।
হ্যা, এন্জেল তোমাকে প্রতিদিন গান শুনাবে আর তুমি তাকে খুব আপনজন হিসাবে পাবে।
আর ওখানকার লোকজন কি বলে তা আমি কিভাবে বুঝব? আমিতো তাদের ভাষা বুঝিনা।
এটা খুবই সহজ। তোমার এন্জেল তোমার সাথে অনেক মজার মজার এবং মিষ্টি সব গল্প করবে।এত যত্ন করে তোমাকে শোনাবে, তুমি খুব মগ্ন হয়ে সেসব শুনবে। আর এভাবেই সে তোমাকে তাদের ভাষাটা শিখিয়ে দেবে।
শিশুটি সৃষ্টিকর্তার দিকে তাকাল। কিন্তু আমি যদি তোমার সাথে কথা বলতে চাই তাহলে কিভাবে বলব?
সৃষ্টিকর্তা হেসে জবাব দিল, এন্জেল তোমাকে শিখিয়ে দিবে কিভাবে প্রার্থনা করতে হয়।
শিশুটি পুনরায় প্রশ্ন করল: কিন্তু আমি শুনেছি ওখানে অনেক খারাপ লোক আছে। তাদের ক্ষতি থেকে কে আমাকে রক্ষা করবে?
সৃষ্টিকর্তা বলল: তোমার ঐ এন্জেল তোমাকে সকল ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে। এজন্য যদি তার জীবন দিতে হয় সে কুন্ঠাবোধ করবে না।
কিন্তু আমিতো তোমাকে আর দেখতে পাবো না!শিশুটি পুনরায় জানতে চাইল।
এন্জেল তোমাকে সবসময় আমার কথা বলবে। এখানে কিভাবে ফিরতে হবে তা বলে দেবে। কিভাবে আবার আমার দেখা পাবে তাও বলে দেবে। তাছাড়া আমিতো সবসময় তোমার পাশেই থাকবো।
এসময় সর্গ ছিল খুবই শান্ত। কিন্তু পৃথিবীর লোকজনের আওয়াজ শুনা যাচ্ছিল।
শিশুটি তাড়াহুড়া করে বলল: হে সৃষ্টিকর্তা, আমিতো মনে হয় এখনই পৃথিবীতে চলে যাচ্ছি দয়া করে তাড়াতাড়ি আমার এন্জেলটার নাম বলে দাও।
সৃষ্টিকর্তা বলল: এন্জেলের নামটা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়… তুমি তাকে মা বলেই ডাকবে।