The Fire On The Mountain Top


পর্বতে আগুন


 

আফ্রিকার একটি দেশের নাম ইথওপিয়া। সেই ইথওপিয়ার দূরের এক গ্রামে বাস করত আরহা। তার বাবা মা ছিল খুবই দরিদ্র। তারা তাদের সন্তান আরহাকে খাওয়াতে পারত না। গ্রামে তেমন কোন কাজ ছিল না। তাই একদিন আরহা তার জিনিস পত্র গুছিয়ে রাজধানী শহর আদ্দিস আবাবাতে ছুটল কাজের খোঁজে।

শীঘ্রই সে হেমপটন হেসি নামক এক শক্তিশালী লোকের কাছে চাকরি পেয়ে গেল। হেমপটন ছিল খুব ধনী। কিন্তু সে তাতে সন্তুষ্ট ছিল না। টাকা দিয়ে সুখ  ও তৃপ্তি পাওয়া যায় না। সে ছিল খুব বিরক্ত এবং অসন্তুষ্ট। তার কিছু আনন্দের প্রয়োজন ছিল। এতে অন্যের অসুবিধা হলেও হউক। তাতে কিছু যায় আসে না।

এক শীতের রাতে পাহাড় থেকে তীব্র ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল। হেমপটন আরহাকে আদেশ দিল আগুন জ্বালানোর জন্য কিছু কাঠ নিয়ে আসতে।

যখন উজ্বল আলোর শিখা ছড়িয়ে আগুণ জ্বলছিল হেমপটন আরহাকে বলল, ‘ঠাণ্ডায় মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত একজন লোক কতটুকু ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে বলতে পারবে? কেউ কি খালি গায়ে ইনটোট্টো পর্বতের চুড়ায় সারারাত দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে? সে কি ঠাণ্ডায় মারা যাবে?’

‘কোন আগুণ ছাড়া?’ আরহা জিজ্ঞাসা করল।

‘হ্যাঁ।‘ বলল হেমপটন।

‘আমি জানি না।‘ বলল আরহা। ‘তবে এ চেষ্টা করাটা  চরম বোকামি হবে।‘

‘যদি কেউ মজা করার জন্য এটা করে তাহলে আমি বলব সে বোকা।‘ হেমপটন বলল। ‘কিন্ত যদি কাউকে এটা করার জন্য টাকা দেওয়া হয়?’ আমি তাকে প্রচুর পুরষ্কার দেব যদি কেউ এটা করার সাহস দেখায়।‘

‘সেই লোকটির অনেক সাহসের প্রয়োজন হবে।‘ বলল আরহা।

‘তুমি এটা করতে পারবে না।‘ বলল হেমপটান। ‘তুমি একটা কাপুরুষ।‘

‘আমি কাপুরুষ নই।‘ নিজের রাগকে সংযত করে বলল আরহা।

‘তাহলে তুমি এটা করে দেখাও।‘ বলল হেমপটন। ‘সারারাত ইনটোট্টো পর্বতের চুড়ায় দাড়িঁয়ে থাকবে। সম্পূর্ণ খালি গায়ে। কোন আগুণ ছাড়া। কোনো আশ্রয় ছাড়া। যদি তুমি পরের দিন সকাল পযর্ন্ত বেঁচে থাক এবং সুস্থ থাক তুমি তোমার পুরষ্কার দাবি করতে পার। আমি তোমাকে দশ একর ভালো চাষের জমি দেব। একটি ঘর দেব। মেষ আর গরু দেব।‘

আরহা ছিল অনেক সাহসী। সে তার বাবা মার কথা ভাবল। অবশেষে তাদের সাহায্য করার জন্য ভালো একটা সুযোগ সে পাচ্ছে। যদি সে এই বাজিতে জিতে যায় তাহলে সে বাবা মাকে বৃদ্ধ বয়সে ভালোভাবে দেখাশুনা করতে পারবে।

‘আমি চেষ্টা করতে ইচ্ছুক।‘ বলল আরহা।

চতুর হেমপটন নিশ্চিত হতে চায় আরহা কোন চালাকি করবে না। ‘ আমি তোমার সাথে আমার দু’জন লোক পাঠাব।‘ সে বলল। ‘তারা যা ঘটছে সবকিছু দেখবে আর আমাকে জানাবে।‘

‘এতে আমার কোন আপত্তি নেই।‘ বলল আরহা।

সেই রাতে আরহা ঘুমাতে পারেনি। খুব ভোরে উঠে সে গ্রামের এক বুড়ো জ্ঞানী লোকের কাছে গেল। লোকটি ছিল তারই গোত্রের। তার বাবা মাকে লোকটি খুব ভালো করে চিনত।

‘আপনি তো আমার বাবা মাকে ভালো করে চিনেন। আমি আপনার একটি উপদেশ নিতে এসেছি।‘ বলল আরহা।

বৃদ্ধ লোকটি খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনল।

‘যদি আমি চেষ্টা না করি তাহলে আমার মালিক ভাববে আমি একটা কাপুরুষ। কিন্তু যদি আমি চেষ্টা করি তাহলে আমি মারা যেতেও পারি। আমার এখন কি করা উচিত?’ আরহা জানতে চাইল।

No comments:

Post a Comment